রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য
কবি রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গলের পরিচিতির পাতায় . . .
রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাব্যের সূচি
শুন্যাছি তোমার নাম সংসার বিদিত |
কলিযুগে অবতার যেন ইন্দ্রজিত ||
এত শুনি কর্পূর পাতর কিছু কন  |
কোথাকার মল্ল বেটা কি জানে সরণ  ||
যেখানে সেখানে বেটা ভিক্ষা মাগি খায় |
হেন ছার মল্ল বেটা গুরু হৈতে চায়  ||
এত শুনি লাউসেন হাসে খলখল |
সহিতে নারিল গুরু মল্ল সারেঙ্গধল ||
অচঞ্চল অধর আপনি কোপে নড়ে |
আখড়া মন্দিরে কোপে লম্ফ দিয়া পড়ে  ||
গোটা দশ লম্ফ দিল উলটি-পালটি  |
ময়নার কাঁপি গেল কুড়ি হাত মাটি  ||
বার সঙ্গের পাথর বাঁ হাথে গুঁড়া করে  |
দুবীরে বাজিল দ্বন্দ্ব আখড়ার ঘরে  ||
দুই বীরে গালাগালি ধূলা মাখে গায়  |
চাকের ভাঙুরি প্রায় ঘোরে পায় পায়  ||
ধরাধরি দুই বীরে চাকের ভাঙুরি |
সংগ্রাম ভাঙিল যেন শার্দূল কেশরী  ||
হাথে হাথে দুই বীরে চলে কসাকসি |
ধাত্তাধাই মাথার উপর ঢুসাঢুসি  ||
দুই প্রান্তে দুরন্ত কাছাড়খায়্যা পড়ে  |
ফণিমণি-শিখরে অবনীখান নড়ে ||
আখড়ামন্দিরখান নড়ে দুরদুর  |
কৃষ্ণের সমুখে যেন সাক্ষাত চাণুর  ||
চাপড় হানিল তেজে সারেঙ্গমাল-বুকে  |
ঝলকে ঝলকে রক্ত নিঃসরিল মুখে ||
ধন্য বলি বাখানিল মল্ল সারেঙ্গধল |
শুখাইল সব তনু খায় গঙ্গাজল ||
লাউসেন বলে তোর বধিব জীবন |
সভে মাত্র দুই যাম দিবস বিলম্বন ||
এত অহঙ্কার করে ময়নার রায়  |
লাফ দিয়া সারেঙ্গধল পড়ে তার গায়  ||
দুই মল্লে বাজিল ধূলায় গড়াগড়ি |
উলটি-পালটি করে কত হুড়াহুড়ি ||
লাউসেনের পায়ে ধরি সারেঙ্গধল তোলে |
ঐমনি পতঙ্গসম শূন্যে লয়্যা পেলে ||
বিষ্ণুপদতলে সেন নানা গদ্য গায়  |
অকালে তুরঙ্গ যেন বিড়ঙ্গ খেলায়  ||
পতঙ্গ সমান কাঁপে লাউসেন বীর |
লম্ফ দিয়া পড়ে পুনু আখড়া মন্দির ||
মালসাট সত্বরে সঘনে সিংহনাদ  |
দেবতা অসুর বলে এ বড় প্রমাদ ||
সর্বতনু পরিপূর্ণ মাখে রাঙ্গা ধূলা |
মনে করে উড়াব বাতাসে যেন তুলা ||
খেলা করে স্বরুপ পশ্চাত হয়্যা যায় |
হেন বেলা সারেঙ্গেধল ধরে দুই পায় ||
কাছাড় মারিতে চায় শিলার উপর |
পরাজই হৈল বালা লাউসেন কুঙর  ||
ঐমনি কাছাড় সারে মুখে নাই রা  |
ডানি হাত ভাঙ্গিল, ভাঙ্গিল ডানি পা  ||
ষোল সাঙ্গের পাথর দিল লাউসেনের বুকে |
কাতর হৈল সেন রক্ত উঠে মুখে ||
পরাজই দৈব্যের বিপাকে বীরবল  |
তবে গিয়া বাসায় বসিল সারেঙ্গধল ||
আনন্দে বাসায় রহে ছয় শিষ্য কাছে  |
নিকট মরণ তার বাম আঁখি নাচে ||
এথা রাজা লাউসেন কাতর বড় মনে |
কপূর্র পাতর তারে বলে কানে কানে ||
মনে নাই পড়ে দাদা অর্জুন-সারথি |
এক নামে অজামিল পাইল কোন্ গতি ||
মনে চিন্তা কর ধর্ম অনাদ্য ঠাকুর  |
যার নামে জই হৈল বৈষ্ণব বিদুর ||
এত যদি কর্পূর বলিল বিবরণ |
পান্ডব সারথি ধর্ম কৈল সঙরণ  ||
দীনবন্ধু নাম তব বিদিত ভুবনে |
মহিমা শুনিল বড় জয়মুনিপুরাণে ||
মনে হোম মনে যজ্ঞ মনে অর্ঘ্যদান |
মনে মনে সঙরণ করে ভগবান ||
অহে ধর্মঠাকুর দিনের করতার |
সুধম্বার রণে কৈলে অর্জুনে উদ্ধার ||
মহিমা শুনিনু আর পান্ডববিজয়  |
তবে কেন মল্লের সমরে পরাজয়  ||
মনে মনে অর্ঘ্য দিল ধর্মের চরণে  |
হেনকালে জানিল অনাদ্য নিরঞ্জনে  ||
অন্তরযামিনী ধর্ম জানিল সত্বর |
হনুমানে আপনি বলেন মায়াধর ||
অবিলম্বে মনে কর ময়না ভুবন |
একদন্ড না সহে কথার বিলম্বন ||
তোমা হৈতে জানকীর হইল উদ্ধার |
তোমা হেতু সেতুবন্ধ হৈল অবতার ||
তুমি মন দিলে হয় পূর্ণ বারমতি  |
কলিযুগে থাকে তবে পূজার পদ্ধতি ||
পশ্চিম উদয় দিলে তবে পূজা পাই |
লাউসেন রাখিতে তুমি যাও ধাত্তাধাই ||




.                                                   
মল্লবধ পালার পরের পৃষ্ঠায় . . .  
.                                                                 
এই পাতার উপরে . . .     


মিলনসাগর
১    বন্দনা  পালা     
.          
গনেশ বন্দনা    
.          
ধর্ম্ম বন্দনা    
.          
ঠাকুরাণী বন্দনা     
.          
চৈতন্য বন্দনা    
.          
সরস্বতী বন্দনা     
.          
বিপ্র বন্দনা      
.          
দিগ্ বন্দনা    
২   
আত্মকাহিনী    
৩   
স্থাপনা পালা    
৪    
আদ্য ঢেকু পালা    
.           
গজেন্দ্র মোক্ষণ    
৫    
রঞ্জার বিবাহপালা     
৬   
লুইচন্দ্র পালা     
৭   
শালেভর পালা    
৮   
লাউসেনের জন্মপালা      
.            
পরিশিষ্ট, জন্মপালা      
৯   
লাউসেন চুরিপালা    
১০
আখড়া পালা     
১১
ফলানির্মাণ পালা     
১২
মল্লবধ পালা      
১৩
বাঘজন্মপালা     
১৪
বাঘবধ পালা      
১৫
জামতি পালা      
১৬
গোলাহাটপালা      
১৭
হস্তিবধপালা      
১৮
কাঙুরযাত্রাপালা      
১৯
কলিঙ্গাবিভাপালা     
২০
লৌহগন্ডারপালা       
২১
কানড়াবিভাপালা      
২২
অনুমৃতাপালা     
২৩
ইছাইবধপালা     
২৪
অঘোরবাদলপালা     
২৫
জাগরণপালা     
২৬
স্বর্গারোহণপালা     
ল্লবধ পালার আগের পৃষ্ঠায় . . .
রূপরামের ধর্ম্মমঙ্গল
|| মল্লবধপালা ||
পৃষ্ঠা