রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য |
রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাব্যের সূচি |
গোড়াইল পশ্চাৎ মদনা তার রাণী | নিবাস করিল ব দিবস রজনী || হরিচন্দ্র অমরাবতীর মহারাজা | বংশের কারণে বনে করে কৃষ্ণপূজা || বিষ্ণুপূজা বিস্তর করিল তপোবনে | বংশের উৎপতি যাব দুখ ভাবে মনে || যতী সতী বিস্তর তপস্বী বনে আছে | সারাদিন ভ্রমণ সভার কাছে কাছে || ভুজঙ্গমালীর মত গড়াগড়ি যান | সে জন পুত্রের হেতু কাননে বেড়ান || উপবাসী রাজারাণী নাঞী খায় জল | পঞ্চদিন বৈ হইলে সভে এক ফল || কাননে কাননে কুলে দেখে মুনিগণ | মন হৈল মহীলতা মলিন বদন || বলিতে না পারে বনে বংশের উত্পতি | অনেক সন্ন্যাস করে যোগী যতী সতী || পাটরানী মদনা ইষৎ পাছুআন | [ রাজারানী কাননে ] অনেক দুঃখ পান || কপালে আঘাত দুঃখ ভাবে মনে মনে | হরিচন্দ্র মহারাজা [ বুলে ] বনে বনে || [ রাজারানী ] ভ্রমণ করেন বনে বনে | অমরাবতীর রাজা কেহ নাঞী জানে || বনে বনে রাজারানা বড় পায় দুখ | নিরবধি থাকে রানী রাজার সমুখ || জলঝারি ফলমূল সদাই সঙ্গতি | কাননে কাননে রাজা সঙ্গে রূপবতী || নিশি দিসি মনে দুখ সদাই সন্তাপ | শার্দ্দূলের ভয় বড় সিংহের প্রতাপ || অনেক দিবসে পাল্য বল্লুকার তীর | পুরট রচনা দেখে বিনোদ মন্দির || পরিপাটি ধর্ম্মের দেহারা মনোহর | পূজা করি আমিনী সকল যায় ঘর || কপালে ধর্ম্মের টীকা কাঞ্চন-বাটা হাথে | আচম্বিতে দেখা হল্য মদনার সাথে || রাম সীতা সাক্ষাৎ দেখিল নববধূ | রতি সতী সমান বচন রসমধু || লোচনে লোচনে যুক্তে যুবতীরা কয় | জিজ্ঞাসিল বনে কেন তোমার বিজয় || বচন বলিতে পায় লোটায় মদনা | কান্দিতে কান্দিতে বলে বিশেষ করুণা || মদনা আমার নাম বড় অভাগিনী | অমরাবতীর অই রাজা গুণমণি || রাজপাট পুরট পরম সিংহাসন | পরে লুট করে ধন রজত কাঞ্চন || বিনোদ মন্দির বনি বংশ নাঞী কোলে | কানা খোঁড়া পথে ঘাটে আঁটকুড়ি বলে || পুত্র-হেতু মনে বড় পাই মন ব্যথা | কার ঠাঞী পাব ধর্ম্মপূজার বারতা || এ বোল শুনিঞা বলে বনবধূগণ | বল্লুকার তীরে আছে ধর্ম্মের গাজন || শিখি-পাখা চামরী ছায়নি চারি চাল | রায়টী পাথরে [ বান্ধা বিনোদ বিশাল ] || নিশ্চয় বচন শুন রানী আর রাজা | সেইখানে ঠাকুরে পূজিল পাঁচ বাঁজা || যে বর মাগিবে তথা সেই বর পাই | এই দেখ ঠাকুর পূজিল [ মোরা যাই ] || উ পদে শরণ নিল তোমরা তথা যাও | গহন কাননে কেন মিছা দুখ পাও || এত শুনি রাজা রানী হরিষ অন্তরে | বল্লুকার দেউলে ধর্ম্মের পূজা করে || রাজা রানী নিয়মে রহিল রাত্রি দিনে | পূজা করে আনন্দ হরিষ বড় মনে || মদনা সহিত তবে হরিচন্দ্র রাজা | তুলা মীন মকরে বসন্তে দেই পূজা || যমরাজা নাঞী পায় ধর্ম্মের দর্শন | দিবস রজনী রাজা জপে মনে মন || জয় দেই মদনা হরিষ মনোরথে | ধুনার সৌরভ গেল দু-যামের পথে || বিস্তর করিল স্তব প্রভুর উদ্দিশে | দেখা দিল ধর্ম্মঠাকুর সন্ন্যাসীর বেশে || বর মাগ আপনি অমরাবতী-রায় | নিজগুণে তোমাকে সহজে বর-দায় || চল রাজা বাড়ীকে সফল সিদ্ধ কাজ | আমি স্বর্গ পাতাল ঠাকুর ধর্ম্মরাজ || এত দিন এখানে এমন দুঃখ পাও | [ পুত্র হৈলে ] আমাকে কি দিবে বল্যা যাও || . লুইচন্দ্র পালার পরের পৃষ্ঠায় . . . . এই পাতার উপরে . . . মিলনসাগর |