রূপরামের ধর্ম্মমঙ্গল
|| আখড়া পালা ||
পৃষ্ঠা                 
রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য
কবি রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গলের পরিচিতির পাতায় . . .
রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাব্যের সূচি
এক চড়ে মল্লকে মারিতে পারি ঠায়  |
এত বলি লাউসেন মল্লপানে চায়  ||
বসিলে উঠিতে নারে জরাজীর্ণ বল  |
বুড়া হৈলে বল বুদ্ধি যায় রসাতল ||
এত শুনি হনুমান জ্বলন্ত আগুন |
অকালে অনিল কিবা সহস্র অর্জুন ||
গোটা দশ লম্ফ দিল উলটি পালটি |
ময়না কাঁপিয়া গেল কুড়ি হাথ মাটি ||
ষোল সাঙ্গের পাথর বাঁ হাথে করে গুঁড়া |
কর্পূর বলেন দাদা মল্ল নয় বুড়া ||
মল্লের বিক্রম দেখি সর্বলোক ত্রাসে |
গুরু বলি লাউসেন মল্লকে সম্ভাষে ||
কর্পূর পাতর বন্দে গুরুর চরণ  |
অখড়া মন্দিরে গিয়া দিল দরশন ||
দুই ভাই মল্লযুদ্ধ শিখে নিরন্তর |
সরণ শিখান বীর পবন-কুঙর ||
এক মনে লাউসেন গুরুর সেবা নিল |
সঙ্গে ভাই কর্পূর সরণে মন দিল ||
হাথে হাথে সরণ শিখান হনুমান |
আগু পাছু চলনি চরণে সাবধান ||
ঐ রূপে লম্ফ দেই উলটি পালটি |
ঝনঝনা শবদ চরণে তুলা কুটি ||
দুমদাম দুই পাশে সঘন কাছাড়  |
সরণ সাধনে হৈল চুরমার হাড়  ||
ধরাধরি দুভাই দুহাথে কসাকসি |
ধাপধাই ঐমনি মাথায় ঢুসাঢুসি ||
বরণ বৈশাখ চাঁপা বচন পীযুষ |
কৃষ্ণ বলরাম কেহ বলে লবকুশ ||
নিরবদধি সেবা করে গুরুর চরণ |
গুরুভক্তি বিদ্যা লভে বলে সর্বজন ||
সদাই গুরুর পায়ে করে দন্ডবত  |
দুই ভাই আখড়া খেলিছে অবিরত ||
মল্লভাবে দুভাই করয়ে মার কাট  |
পুনরপি দুইভাই ধুলায় ঝুটপাট ||
চাকের ভাঙুরি ঘুরে চরণে চরণ  |
কর্পূর বলেন দাদা শুন নিবেদন ||
জানিব জানিব তোর আছে যত বল |
বাম হাথে তুলিবে পাথর জগদল ||
মনে কর আমার সমান মল্ল নাই |
গুরুর সমুখে আজি দেখিব বড়াই ||
এত শুনি-লাউসেন পাথরখান তোলে |
ছ মাসের শিশু যেন কেহ নিল কোলে ||
বাঁ হাথে পাথর পেলে ডানি হাথে ধরে  |
শিশু যেন ফুলের গেড়ুয়া খেলা করে ||
কর্পূর বলেন দাদা তুমি অবতার |
ইন্দ্র হৈতে দ্বিগুণ দেখিনু অহঙ্কার ||
কি দিব তুলনা-কিবা মেঘনাদ মহী  |
গর্জনে গগন কাঁপে পর্বতের অহি ||
ধন্য বলি বাখানিল কর্পূর দোসর |
দ্বিজ রূপরাম গান নিরঞ্জনের বর ||

হনুমান সরণ শিখান দিবারাতি |
কসরত শিখিল লঙ্ঘিতে পারে হাথি ||
দুমদাম দুদিগে কাছাড় খায়্যা পড়ে |
ফণিমণি শিখরে অবনীখান নড়ে  ||
লম্ফ দেই অম্বরে তরণি কম্পমান |
পাতালে বাসুকি কাঁপে স্বর্গে মঘবান ||
সরণ শিখাল বীর পবননন্দন |
শশী বিন্দু মুখ ঐরি করেণ স্মরণ ||
লাউসেন থাকে সদা আখড়ার শালে |
ষোল গাইর দুগ্ধ খান বিহান বিকালে ||
দশ দিনে সরণ শিখাল্য হনুমান |
তবে কিছু বলেন লাউসেন সন্নিধান ||
পরিবার বান্ধব পড়িয়া গেল মনে |
অতঃপর বিদায় কর্পূর লাউসেনে ||
আশিস্ করিল দুঁহে হবে চিরজীবী |
বলবন্ত হইবে সিংহের যেন ছবি ||
আরতি লইয়া রাজ্য কর সর্বকাল |
দরশনে রিপু যাকু সপ্তম পাতাল ||
এত শুনি লাউসেন ব্যাকুল পরাণ |
কাতর হইয়া বলে অঝোর নয়ান ||
মনে ছিল সেবা নিব যাবত জনম |
দিবসে দিবসে যায় বয়স বিক্রম ||
দিন কথ এখানে বিলম্ব সমুচিত |
কর্পূর বলেন সঙ্গে গোড়াইয়া যাব  ||
এমন গুণের গুরু কোথা গেলে পাব |
এত উপদেশ বিদ্যা পাব কার ঠাঁই ||
মনে দড় গণিল এমন গুরু নাই |
রাজার মহলে গিয়া বারতা পড়িল ||
লাউসেনের মল্লগুরু বিদায় মাগিল |
যেই রূপে ধায় রাণী সেই রূপে রাজা ||
মনে করে কি দিয়া মল্লের করি পূজা |




.                                                   
আখড়া পালার পরের পৃষ্ঠায় . . .  
.                                                                 
এই পাতার উপরে . . .     


মিলনসাগর
১    বন্দনা  পালা     
.          
গনেশ বন্দনা    
.          
ধর্ম্ম বন্দনা    
.          
ঠাকুরাণী বন্দনা     
.          
চৈতন্য বন্দনা    
.          
সরস্বতী বন্দনা     
.          
বিপ্র বন্দনা      
.          
দিগ্ বন্দনা    
২   
আত্মকাহিনী    
৩   
স্থাপনা পালা    
৪    
আদ্য ঢেকু পালা    
.           
গজেন্দ্র মোক্ষণ    
৫    
রঞ্জার বিবাহপালা     
৬   
লুইচন্দ্র পালা     
৭   
শালেভর পালা    
৮   
লাউসেনের জন্মপালা      
.            
পরিশিষ্ট, জন্মপালা      
৯   
লাউসেন চুরিপালা    
১০
আখড়া পালা     
১১
ফলানির্মাণ পালা     
১২
মল্লবধ পালা      
১৩
বাঘজন্মপালা     
১৪
বাঘবধ পালা      
১৫
জামতি পালা      
১৬
গোলাহাটপালা      
১৭
হস্তিবধপালা      
১৮
কাঙুরযাত্রাপালা      
১৯
কলিঙ্গাবিভাপালা     
২০
লৌহগন্ডারপালা       
২১
কানড়াবিভাপালা      
২২
অনুমৃতাপালা     
২৩
ইছাইবধপালা     
২৪
অঘোরবাদলপালা     
২৫
জাগরণপালা     
২৬
স্বর্গারোহণপালা     
খড়া পালার আগের পৃষ্ঠায় . . .