রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য
কবি রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গলের পরিচিতির পাতায় . . .
রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাব্যের সূচি
কত ধনে বিলাশ করিল মন্দোদরী  ||
অরুণ কমলদল বদনের রুচি  |
কত ধনে ঘর করে অমরার শচী  ||
ধনে কাজ নাই কিছু তুমি প্রাণধন |
চল যাই দুজনে মথুরা বৃন্দাবন ||
অহল্যার পারা আমি দুচারিণী নই |
যদি বৈস বিরলে মনের কথা কই  ||
পরম সুন্দর তুমি জগতের ভাল  |
ভাল হৈল বিধাতা আনিয়া দিল ভাল ||
বিশেষ পামর মন পিরিতির মরা  |
এহার কারণে হৈল দুই কুল হারা ||
তবে বল বিধাতা আমারে অনুকুল  |
সাধ কব়্যা কেবা পরে শিমুলের ফুল  ||
এত শুনি লাউসেন শ্রবণে দিল হাথ  |
তিনবার স্মরণ করিল রাধানাথ   ||
রাম নারায়ণ হরি বলে তিনবার  |
স্মরণ কমলা কালী মনে অবতার ||
সহিতে না পারে বীর কোপে কম্পমান |
আপনার হুকুমে কাটিব নাককান ||
অবশ্য কাটিব তোর মাথার লোটন |
সূর্পনখার নাক যেন কাটিল লক্ষ্মণ ||
এত বলি লাউসেন অরুণ চক্ষে চায়  |
ঈশ্বরী বলেন শুন ময়নার রায়  ||
অর্জুনের রূপ যদি দেখিল ঊর্বশী |
মনে করে কৌতুকে বঞ্চিব আজি নিশি  ||
বিধাতা বঞ্চিত করে যত অভিলাষ  |
সেই দোষে অর্জুনের হৈল সর্বনাশ  ||
মনে জানি কহ তুমি দুচারিণী মেয়্যা |
নিরবধি রহিব তোমার মুখ চায়্যা ||
হাথে হাথে সদাই যোগাব গুয়াপান   |
তোমায় আমায় আজি একুই পরাণ  ||
লাউসেন বলে শুন বচন সুসার |
দুচারিণী মেয়্যার বচন ষোল ধার  ||
অসতী লোকের সঙ্গে করিলে আলাপ  |
একাসনে বসিলে বিস্তর বাড়ে পাপ  ||
পতিব্রতা সম ধর্ম নাহি ত্রিভুবনে |
চিন্তামণি শুদ্ধ হৈল কিসের কারণে ||
ত্রিভুবনে তোর পারা কে আছে অভাগী |
গৌরব রাখিয়া চল দুচারিণী মাগী ||
পুনরপি হাসিয়া বলেন দশভূজা |
মন দিয়া শুন অহে ময়নার রাজা  ||
তুমি মনে কর আমি কুলে শীলে দড়  |
ইন্দ্রকে চাহিয়া তুমি কোন্ গুণে বড়  ||
কিবা অপরাধে হৈল সহস্র লোচন |
অঞ্জনা দেখিয়া কেন ভুলিল পবন  ||
কেবা আছে যতী রায় কেবা আছে সতী  |
দ্রুপদ রাজার কন্যা ভজে পাঁচ পতি ||
পাঁচ পতি দ্রৌপদী কেমনে ভজে একা  |
অপযশ এত মোর কোন্ শাস্ত্রে লেখা  ||
সব বল সতী হৈল অসতী কেমন |
মন্দোদরী ভজিল দেওর বিভীষণ ||
তারা লয়্যা সুগ্রীব কেমনে করে কেলি  |
কমলের ফুলে কেন খেলা করে অলি  ||
সভাকার সব জানি কুলের বড়াই |
খুঁজিলে অনেক আছে কার দোষ নাই ||
দেবতা অসুর দেখ বড় বড় ধনী  |
ঘরে বসি সভাকার সব কথা শুনি ||
তবে যদি কন্যা বলি খোঁটা দিব রঙ্গ |
আছুক অন্যের কাজ কৃষ্ণের কলঙ্ক  ||
অকারণে ফুল ফোটে তুল্যা লয় মালী  |
এত সব থাকিতে চন্দ্রের গায়ে কালি ||
জলের ভিতর দেখ কমলের ডাঁটা  |
তায় বস্যা বিধাতা নির্মাণ করেন কাঁটা  ||
এত যদি নিবেদিল বিষ্ণুর জননী  |
হেঁটমুখে চিন্তেন ময়নার গুণমণি  ||
ব্রহ্মার জননী বলি জানিল অন্তরে  |
জয়দূর্গা অবতীর্ণ আখড়ার ঘরে ||
চিনিল লাউসেন রাজা করে নিবেদন |
নয়ন ভরিয়া দেখে অভয়চরণ  ||
জানিনু জানিনু গো তোমার যত কলা  |
আর কেহ নহ তুমি সর্বমঙ্গলা  ||
হরিভক্তি প্রদাইনী তুমি ভাগবত  |
অবনী লোটায়্যা রাজা করে দন্ডবত ||
যখন গোকুলে হরি কৃষ্ণ-অবতার |
রাধা আদি গোপী পূজা করিল তোমার ||
তোমার সেবনে পাইল কৃষ্ণ হেন পতি |
সত্যভামা ঠাকুরাণী আর জাম্ববতী ||
ভবানী বলেন বাপা মাগ্যা লহ বর |
অধিকার দিব কিছু ইন্দ্রের উপর ||
যে বর মাগিবে তুমি সেই বর দিব |
মনের বাসনা তোর সফল করিব ||
লাউসেন বলে পুনু অভয় চরণে  |
তুমি জয়দূর্গা আমি জানিব কেমনে ||
বলিতে উচিত পাছে মনে কর ক্রোধ  |
যদি দেখি দশভূজা মনের প্রবোধ  ||
এত যদি নিবেদিল ময়নার রাজা |
আচম্বিতে বেউশ্যা হইল দশভুজা ||




.                                                   
আখড়া পালার পরের পৃষ্ঠায় . . .  
.                                                                 
এই পাতার উপরে . . .     


মিলনসাগর
১    বন্দনা  পালা     
.          
গনেশ বন্দনা    
.          
ধর্ম্ম বন্দনা    
.          
ঠাকুরাণী বন্দনা     
.          
চৈতন্য বন্দনা    
.          
সরস্বতী বন্দনা     
.          
বিপ্র বন্দনা      
.          
দিগ্ বন্দনা    
২   
আত্মকাহিনী    
৩   
স্থাপনা পালা    
৪    
আদ্য ঢেকু পালা    
.           
গজেন্দ্র মোক্ষণ    
৫    
রঞ্জার বিবাহপালা     
৬   
লুইচন্দ্র পালা     
৭   
শালেভর পালা    
৮   
লাউসেনের জন্মপালা      
.            
পরিশিষ্ট, জন্মপালা      
৯   
লাউসেন চুরিপালা    
১০
আখড়া পালা     
১১
ফলানির্মাণ পালা     
১২
মল্লবধ পালা      
১৩
বাঘজন্মপালা     
১৪
বাঘবধ পালা      
১৫
জামতি পালা      
১৬
গোলাহাটপালা      
১৭
হস্তিবধপালা      
১৮
কাঙুরযাত্রাপালা      
১৯
কলিঙ্গাবিভাপালা     
২০
লৌহগন্ডারপালা       
২১
কানড়াবিভাপালা      
২২
অনুমৃতাপালা     
২৩
ইছাইবধপালা     
২৪
অঘোরবাদলপালা     
২৫
জাগরণপালা     
২৬
স্বর্গারোহণপালা     
খড়া পালার আগের পৃষ্ঠায় . . .
রূপরামের ধর্ম্মমঙ্গল
|| আখড়া পালা ||
পৃষ্ঠা