রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য |
রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাব্যের সূচি |
পাত্র বলে অহে রাজা না বসিলে নয় | আঁটকুড়া দরশনে মহাপাপ হয় || [ ভাগ্যহীন ] জনের জীবনে নাঞী সুখ | সকালে দেখিতে নাঞী আঁটকুড়ার মুখ || পুত্র-আঁটকুড়ার মুখ কভু নাঞী চাই | কন্যা-আঁটকুড়ার ঘরে জল নাঞী খাই || ভোজনের কালে যদি শ্বানে ছুয়া যায় | তাকে চায়্যা মহাপাপ দেখিলে ইহায় || এতকাল দান দিলে হেম ও নিবাস ( ? ) | কৃষ্ণকথা শুনিলে [ সফল ] অভিলাষ || অশ্ব গজ অনেক ব্রাহ্মণে দিলে দান | সফল জনম তব শুনিলে পুরাণ || সকল বিফল রাজা হৈল এত দিনে | আঁটকুড়া সম্ভাষ করিলে একাসনে || রায় কর্ণসেনে লোক আঁটকুড়া বলে | কর্ণসেন আঁটকুড়া কেনে কোল দিলে || ভৈরবী গঙ্গার জলে কর গিয়া স্নান | সেই জল পরশিলে মহাপাপ জান || কার বোলে আঁটকুড়ায় করিল পরশ | রাম রাম কৃষ্ণ কৃষ্ণ বল বার দশ || পাত্রের বচনে মহারাজা দিল মন | তিন বার রাম কৃষ্ণ করে স্মঙরণ || পাছু হল্য কর্ণসেন পায়্যা অপমান | রাজার সমুখে কান্দে মনে নাহি আন || রায় কান্দে রাজা কিছু না করে উত্তর | কান্দিয়া চলিল সেন আপনার ঘর || সঙ্গের নফর তার বাড়াইল সাথে | চক্ষে ধারা দ্বিগুণ পড়িয়া যায় পথে || বড় গঙ্গা পার হৈল্য বালিঘাটা পাছু | রমতির সাচার নাঞী নিল কিছু || গোলাঘাট জামতি করিল পাছুয়ান | কালুর্ত্তক কর্জ্জনা রাখিল বর্দ্ধমান || দামুদর পার হৈল্য সর্ব্বত্র এড়ায় | মোগলমারি উচালন এড়াইয়া যায় || রাঙ্গামেট্যা মান্দারন যায় এড়াইয়া | পদুমার বিলে সেন উত্তরিল গিয়া || উত্তরিল কর্ণসেন আপনার ঘরে | দুয়ার হৈতে গেল ভিতর মহলে || যেইখানে বস্যা আছে রাণী রঞ্জাবতী | সেইখানে কর্ণসেন হৈল উপনীতি || দুঃখ-মনে বসিলেন ময়নার ঈশ্বর | নয়ন সজল দেখি না দিল উত্তর || বিনয় বলেন রঞ্জা বেনুরায়ের ঝি | আমার মাথার কিরা সমাচার কি || কেন দেখি মলিন বদন-সুধাকর | অধর হয়্যাছে কালি নাসিকা-শিখর || কেবা আছে মনুষ্য তোমার চায়্যা বড় | রাবণের পারা ধন কুলে শীলে দড় || বড় নহে কুবের তোমার চায়্যা ধনী | কার বোলে অভিমান এত কর তুমি || রাজার দরবারে আছে যতেক রসিক | কুলে শীলে তোমা হৈতে কে আছে অধিক || কিবা দোষ পাল্যে তুমি রাজার সমাজে | অভিমান তোমাকে অতেব নাহি সাজে || নিরঞ্জনের মঙ্গল কহ সর্ব্বজন | আসর সহিত হরি বল সর্ব্বজন || কর্ণসেন বলে শুন রাণী রঞ্জাবতী | তুমি আজ্ঞা দিলে যাইতে গৌড় বসতি || রাজার সমুখে বড় অপমান পাইল্য | অভিমত সকলে রাজারে বুঝাইল || আঁটকুড়া বলি গালি দিল তোর ভাই | সভা বিদ্যমানে আমি বড় লজ্জা পাই || আমারে দেখিয়া পাত্র আঁটকুড়া বলে | শুনিঞা পাত্রের কথা রাজা পড়ে ভোলে || রাজার সভাতে পাত্র বলে আঁটকুঁড়া | অনেক বলিল মন্দ দিয়া হাত-নাড়া || পাত্র বলে আঁটকুড়া যে করে পরশ | রাম রাম রাজাকে বলায় বার দশ || বড় লজ্জা পাইলাঙ আমি গৌড়-দরবার | পুত্র বিনে ধন কড়ি সকলি অসার || শুন প্রিয়ে আমার জীবন অকারণ | আঁটকুড়া নাম শুনি হাসে সর্ব্বজন || রাজার সমুখে প্রিয়া বড় পাইল লাজ | মনে করি এ ছার জীবনে নাঞী কাজ || পুত্র না থাকিলে লোক আঁটকুড়া বলে | রঞ্জাবতী বলে কালি বংশ হবে কোলে || শালা-বনুয়ের কথা পরিহাসময় | অপরাধ শালার বনুই নাঞী লয় || ভাল হৈল গালি দিল আঁটকুড়া বলি | কেবা করে বিশ্বাস পরের গালাগালি || . রঞ্জার বিবাহ পালার পরের পৃষ্ঠায় . . . . এই পাতার উপরে . . . মিলনসাগর |