রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য |
রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাব্যের সূচি |
গড়াগড়ি যায় খোপা সাধের ভাবন | বালক রহিল জাগে না করিল রোদন || ঘরের বিরাল নিন্দায় নাছের কুকুর | ফুলবনে গড়াগড়ি ভুজঙ্গ মউর || ধরেছিল মন্ডুক গন্ডুষ নাঞী করে | গিল্যাছিল আহার রাখিল কত দূরে || তাঁত বোনে তাঁতি ভায়্যা ঘন মাথা নাড়ে | নিন্দাটি লাগিল তাঁতি তাঁত-গাড়ে পড়ে || সিন্ধাল চোর সিন্ধ কাটে গৃহস্থের বাড়ি | নিন্দাটি পাইয়া তারা যায় গড়াগড়ি || কাক পক্ষ কোকিল ঘুমায় বস্য ডালে | মকর কুম্ভীর মৎস্য নিদ্রাগত জলে || নিন্দাটি লাগিল গিয়া সভাকার গায় | আছুক অন্যের কাজ জাম্বুকী ঘুমায় || কপাটে প্রবেশ করে যোগিনীর হাড় | সিদ্ধ গুরুর দোহাই কপাটের খিল ছাড় || তবে খিল খসাইল ব্রহ্মার জননী | মহলে প্রবেশ করে প্রসন্ন রজনি || ভেতর মহলে গেল চোর পঞ্চ জন | চারি দিগে ঘর বাড়ি দেখে বিচক্ষণ || চামরে ছায়নি ঘর তের ঘন্টা ঘর | প্রবাল-বান্ধনি রঙ্গ-মন্দির মনোহর || প্রসাদ-মোহিনী ঘর তায় আট পিড়া | চন্দনে লেপিত তায় চন্দনের গড়া || প্রবাল মুকুতা তায় গড়াদড়ি যান | মৈষর পৌষে যেন গৃহস্থের ধান || পান্দার গোহাল্যে যেন ভুজঙ্গের মণি | চোর বলে কর্ণসেন রাজা হইতে ধনী || সুতিকার ঘর পাইল সুন্দর গঠন | দুআরে দান্ডাল্য তবে চোর পাঁচ জন || পূর্ণরস সোনার প্রদীপ সব জ্বলে | চঞ্চল চোরের মন চৌদিক নেহালে || লাউসেন মাএর কোলে সুখে নিদ্রা যান | বাহির হইতে চোর দেখিবারে পান || যশোদার কোলে যেন দৈবকীর ধন | দেবতামূরতি দেখি রঞ্জার নন্দন || বদন প্রসন্ন দেখি কোকিল মূরতি | প্রভাতে কমল যেন জলধর জুতি || নাসিকা উন্নতি জেন সাক্ষাৎ তিলফুল | রাতুল অধর দেখি ভমর আকুল || শোভা করে রাজদন্ড কপালের কাছে | নোতন বদন-শশী আল করি আছে || বদনের শোভা দেখি কান্দে চোর সব | মনে কর কদাচিৎ এ নহে মানব || এহার নাহিক ম়ৃত্যু মনে পাই সাক্ষি | রূপে গুণে এণন মানব নাই দেখি || মথুরা নগরে যখন জন্মিলা মদন | সম্বর করিল চুরি কৃষ্ণের নন্দন || মদন পেলিল নিএ সমুদ্রের নীরে | নারদের বাক্য শুনি চল্যা গেল ঘরে || তথি নষ্ট নাই হৈল কৃষ্ণের তনয় | সেই অবতার কিবা মোর মনে লয় || শিশু দেখি মরমে অনেক দয়া উঠে | এহারে করিলে হত্যা পঞ্চ পাপ ঘটে || কি কর্ম্ম করিল আমি মনুষ্য জন্ম হইয়া | বিপ্রের ভজনা বিনে জন্ম গেল বয়্যা || ছয় মাসের শিশু যদি আমি লয়্যা যাব | যমের দরবারে আমি কত দুঃখ পাব || গোপাল গোবিন্দ হরি না বলিলা মুখে | জন্ম হৈল্য বিফল জনম যায় দুঃখে || শালে ভর দিল রঞ্জা ইহার কারণ | কেমনে করিব চুরি হাপুতির ধন || হেন কর্ম্ম করিআ অকার্য্য অতিশয় | কাঁচ-মূল্যে চিন্তামণি করিল বিক্রয় || আমি নই আমার কতেক দিন জীব | হেন মহাপাপ আমি কেমনে করিব || ছয় দিবসের শিশু পথে যদি মৈল | ইহার বধের ভাগী রাজা পাত্র হৈল || দ্বারেতে বসিয়া কান্দে চোর পাঁচ জন | সিন্ধা বলে নিন্দা ভাই একথা কেমন || রাজার লবণ খাই রাজার চাকর | ইহার হত্যার পাপ রাজার উপর || প্রাণ পাই এখন এড়ালে গুআহাটী | রাজার আজ্ঞা পাইলে বাপের মাথা কাটি || কি করিবে দান তুমি কি করিবে ধ্যান কেন মোরে কৈল হরি পরাধীন প্রাণ পরাধীন সদাই পঞ্জর হইল শেষ বালক বনিতা রাখি বুলি দেশ দেশ অন্যের চাকর হল্য ইথে দোষ নাই লাউসেন লয়্যা যাব যে করে গোসাঞি চোরের ভাগিনা সিন্দা এই যুক্তি করে দ্বিজ রূপরাম গান বাঁকুড়া রায়ের বরে || . লাউসেন-চুরি পালার পরের পৃষ্ঠায় . . . . এই পাতার উপরে . . . মিলনসাগর |